আজ ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪, রাত ৮:০২

খালি লকডাউন দিলেই হইবো? বাসা ভাড়া দিমু কেমনে?

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

মাহদী হাসান সুমন ।।

ব্যবসায়ী, ক্রেতা, চালক কিংবা যাত্রী ওরা ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশকে ভয় পায়, কিন্তু করোনাকে ভয় পায় না। এমন চিত্র এখন রাস্তায় কিংবা কোন মার্কেটে গেলে চোখে পড়বেই। ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিজিবি কিংবা পুলিশ দেখলে “আইয়েরে আইয়েরে”বলে দোকানের ভিতরে ক্রেতা রেখে দ্রুত দোকানপাট বন্ধ করে দিবে। সড়কের যাত্রীরা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ চেকপোস্ট পার হয়ে যাবে কিংবা গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুতবেগে স্থান ত্যাগ করবে। এগুলো এখন কুমিল্লার দৈনন্দিন চিত্র।

লকডাউন নিয়ে উদাসীন নগরবাসী!

ছবিঃ তানভীর দিপু

সংবাদ সংগ্রহকালে দেখা গেছে, ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিজিবি কিংবা পুলিশকে দেখলে সবাই ধাম ধাম করে দোকানের সার্টার নামিয়ে দেয়, দোকানের সামনে পাহারাদার বসিয়ে ১/২টি সার্টারের অর্ধেক নামিয়ে ধুমছে বিকিকিনি করছে, মাস্কহীনরা পকেট থেকে তড়িৎগতিতে মুখে মাস্ক লাগিয়ে নেয় কিংবা যাদের থুতনির নীচে মাস্ক নামানো থাকে তারা দ্রুত মাস্ক তুলে মুখ ঢেকে নেয়। পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে ৯০ ভাগ লোকজন এমন করে। এ যেন ছেলেবেলার চোর-পুলিশ খেলা। কুমিল্লাতে করোনার সঙ্কটাপন্ন অবস্থা বিরাজ করলেও এমন চিত্র সর্বত্রই। কোনভাবেই জনগণকে ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না।

কুমিল্লা নগরীতে মানা হচ্ছে না লকডাউন, নিশ্চিত হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব

করোনা মহামারি থেকে জাতিকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে সরকার ঘোষিত পরিকল্পিত লকডাউন চলমান রয়েছে। যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই সাধারণ মানুষ কিংবা ব্যবসায়ীদের লকডাউন উপেক্ষা করার প্রবনতা প্রবল হয়ে উঠছে। কিছুতেই কাউকে মানিয়ে রাখা যাচ্ছে না। যেন লকডাউন সরকারের চাপিয়ে দেয়া কোন একটা কিছু।

লকডাউন চলাকালীন সময়ে সরজমিনে ঘুরে রাজগঞ্জ বাজার, চকবাজার, সুয়াগাজী বাজার ও এর আঞ্চলিক মহাসড়ক কিংবা শহর ও এর আশেপাশের ছোট বাজারগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা পুলিশের উপস্থিতি দেখা মাত্র মুহুর্তের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করাসহ সবাই সটকে পড়তে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট বাজারগুলো হতে ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ চলে গেলে আবারো জমে উঠে জনসাধারণের হাটা-চলাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এমন বিষয়গুলো সাদামাটা চোখে দেখলে মনে হয় ৯০ ভাগ লোকজন করোনাকে ভয় পায় না, ভয় পায় পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটকে। যেন করোনাকে ঠেকিয়ে রাখার দায় একা সরকারের।

কুমিল্লায় সড়কে কঠোরতা - Amader Comilla

 

ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশাসন অনেকটাই দিশেহারা হওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রচুর সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। তবে যেখানে পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে সেখানে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এই সকল চালকরা। চালকরা বাধাপ্রাপ্ত হলেও যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছা কিন্তু থেমে নেই। এক পরিবহন থেকে নেমে কিছু দূর হেটে আবার আরেক পরিবহন পেয়ে যাওয়ার কারণে মানুষজন অন্য স্বাভাবিক সময়ের মতো রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। যাত্রীদের সাথে কথা বললে তাদের বক্তব্য ছিলো “খালি লকডাউন দিয়া রাখলেই হইবো? আমাদেরতো মৌলিক চাহিদাগুলা মিটানো দরকার, আমরা বাসা ভাড়া কেমনে দিমু? ঘরে খাবার কিছু নাই, ঘরে থাকলে খরচ আরো বাইড়া যায়, বাচ্চারা অনেক বায়না ধরে, পকেটে টাকা থাকতে হইবো ত ভাই, পেটে ক্ষুদা নিয়া ঘরে বইসা থাকা যায়?”।

যান-জনচলাচল বাড়ছে কুমিল্লা নগরে

করোনার বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও রানীর বাজার, নিউমার্কেটসহ বাদশা মিয়ার বাজারে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে পুলিশের বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট রয়েছে। কুমিল্লা রেইসকোর্স উড়ালসেতুর পশ্চিম মাথায় চেকপোস্ট রয়েছে।

Comilla Cantonment !! Gomti Tower !! Dhaka to Sylhet to Chittagong Highway  !! 2019 !! HD - YouTube

এ ছাড়া আলেখারচর বিশ্বরোড এবং ক্যান্টনমেন্ট ফুটওভার ব্রীজের সামনে কুমিল্লা-সিলেট সড়কে আরেকটি চেকপোস্ট রয়েছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশা এই সকল চেকপোস্টে আসলে পুলিশ যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়। এ সকল চেকপোস্টে যাত্রীরা নেমে কিছুটা পথ হেটে ফের ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা কিংবা রিকশায় করে ১০ টাকায় জনপ্রতি ক্যান্টনমেন্ট বাজার অভ্যন্তরে চলে আসে। যাত্রীরা বাজারে কাজ সেরে একইভাবে ফের গন্তব্যে পোঁছে যান। ভয় শুধু পুলিশকে। কেন,কী কারণে চেকপোস্ট বসানো হলো সেই চিন্তা মোটেও কারো নেই। চেকপোষ্ট পার হতে পারলেই চোখে মুখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠতে দেখা গেছে। এ দিন পুলিশ বাধ্য হয়ে বেশ কিছু ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে।

লকডাউনে কুমিল্লা মহাসড়কে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

এ ছাড়াও দেখা গেছে, বিভিন্ন বাজার অভ্যন্তরে ৮০ ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা। রাজগঞ্জ বাজারে সড়কের উভয় পাশে তরকারি ও ফলের দোকানগুলোতে মাস্কবিহীন অবস্থায় অধিকাংশ ক্রেতার সমাগম। বাজারের সকল মার্কেটের দোকানগুলো খোলা থাকাসহ কমবেশি ক্রেতা দেখা গেছে দোকানগুলোতে। তবে পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কখন এসে পড়ে এমন একটা আতঙ্ক দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। তারা পুলিশ কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট ভয় পায়, করোনাকে ভয় পায় না এমন একটা ভাব।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০