নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।
পহেলা আগস্টের ২০১৬ সালের শোকাবহ প্রথম প্রহর। শোকের মাসেই রক্তাক্ত হয়েছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ক্যাম্পাস। কুবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্বালনের সময় আধিপত্য বিস্তারের জেরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হন।
মার্কেটিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ। খালিদ জেলার দাউদকান্দি উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে। ঘটনার পরদিন কুবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। গত পাঁচ বছরেও এ মামলার তদন্ত শেষ হয়নি।
শুরুতে মামলাটি তদন্ত করে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আদালতে মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের ছাত্র বিপ্লব চন্দ্র দাসসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। নিহতের মায়ের নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। কিন্তু পিবিআইর তদন্তেও নারাজির পর মামলার তদন্ত পায় সিআইডি। সেখানের চার্জশিটেও নারাজির পর বর্তমানে মামলাটি পূনরায় তদন্ত করছে পিবিআই।
মামলার অভিযোগ ও তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা যায়, আগস্টের প্রথম প্রহরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে কুবির বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলার হলরুমে হামলা ও পরে গুলিতে আহত হন খালিদ। গুলিবিদ্ধ খালিদকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
মামলার পর তদন্ত শুরু করে জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি কুবির গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রেজাউল ইসলাম ইংরেজি বিভাগ মাস্টার্সের ছাত্র জাহিদুল আলম, লোকপ্রশাসন বিভাগ মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র আবুবকর ছিদ্দিক, বিবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র সুদীপ্তনাথ, বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুপম চন্দ্র দেবনাথ, নৃবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সজল বরণ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ঘটনার তিন দিন পর মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের ছাত্র বিপ্লব চন্দ্র দাসকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার পরিদর্শক মিন্টু দত্ত বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে নারাজি দেওয়ায় বারবার তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন হচ্ছে। আশা করি, এ বছরের মধ্যেই তদন্ত শেষ করা সম্ভব হবে।