লেখক আলী আশরাফ ভুইঁয়া।
৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ ♥️বিরল ভালাবাসা♥️৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷
আমি তাকে জানতাম কেবল বিচক্ষণ,মেধাবী এবং বিনয়ী ফটোগ্রাফার হিসেবে।বগুড়া ও দেশের অনেকেই তাই জানেন।কারণ ওর তোলা বিভিন্ন ছবি The Guardian, The Times,The Telegraph,The Daily Mirror,The Daily Mail,The Sunday Times,The New Statesman,The Sun,The Mail,The Sunday Post, The Financial Times,National Geographic, Stern Magazine,GEO Magazine সহ তিন শতাধিক আন্তর্জাতিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে ছাপানো হয়েছে।
ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শতাধিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার ।কিন্তু একান্তে গল্প করার সময় খেয়াল করলাম ছেলেটি ভেতরে ভেতরে অনেক আলোকিত। প্রচুর পড়ুয়া। জ্ঞান বিজ্ঞানের অনেক শাখায় তার বিচরণ।কি সাহিত্য ,কি দর্শন, কি মানব সভ্যতা কোনটাতেই মেধার কমতি নেই।জানতে পারলাম বাড়ীতে একটি লাইব্রেরীও গড়ে তুলেছে।
ব্যস্ততার কারণে সময় করতে পারছিলাম না।একদিন রাতে নোটিশ ছাড়া গেলাম তার বাড়ীতে। প্রায় এক হাজার জগত বিখ্যাত ইংরেজি বই দিয়ে সাজিয়েছে তার ব্যক্তিগত লাইব্রেরী।একে একে পড়েই যাচ্ছে।তবে অবাক করা কান্ড লাইব্রেরীর সাত শতাধিক বই নিজে বাসায় প্রিন্ট করেছে। নিজ হাতে বাঁধাই করেছে।
অবিকল অরিজিনাল। না বলে দিলে বুঝার কোন কায়দা নেই।বিনীত ভাবে জানালো অনেক বই দেশে পাওয়া যায়না এবং কিনে পড়তে হলে অনেক টাকা খরচ হবে।আমি নিজেও বেশ পড়ুয়া।বিগত পাঁচ কি ছয় মাসে এমন কোন দিন নেই শত ব্যস্ততার মাঝেও কমপক্ষে চার ঘন্টা পড়িনি।
কিন্তু পড়ার প্রতি ওর ভালবাসার কাছে হেরে গেলাম।হেরে গিয়েও আনন্দ পেলাম।স্নেহের পাশাপাশি ওর প্রতি অন্য রকম ভাললাগা তৈরী হলো।পড়ার প্রতি এমন ভালবাসা এবং সাত শতাধিক বই প্রিন্ট করে অবিকল রংগিন কভারে বাঁধাই করে লাইব্রেরী তৈরী করা সত্যি বিরল ।
এমন একটি প্রাণের লাইব্রেরী এ বয়সে দেখিনি।সারা জীবনেও পাব কি না জানিনা।আমার খুব ইচ্ছে সময় পেলে একসময় আসবো, প্রিয় একটা বই নিয়ে নিরবে কাটাবো কয়েক ঘন্টা। প্রিয় Abdul Momin , তোমাকে প্রানাধিক অভিনন্দন।বইয়ের প্রতি এ বিরল ভালবাসা ছড়িয়ে পড়ুক বগুড়া সহ দেশের সকল তরুণ তরুণীর মাঝে।
(লেখক আলী আশরাফ ভুইঁয়া।)