মোঃ জহিরুল হক বাবু।
কুমিল্লার কোতয়ালী থানা এলাকা থেকে মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) কে আটক করেছে র্যাব।
জানা যায়, আসামী শাহ মোঃ আলী শাওন একজন সৌদিআরব প্রবাসী। সে বিভিন্ন স্থানে নিজেকে সৌদিআরবের একজন ভালো চাকুরীজীবি হিসেবে সফল ব্যক্তির পরিচয় দেয় এবং সে বিভন্ন ব্যক্তিদের সাথে সু-সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তাদেরকে সৌদিআররে পঠিয়ে ভালো চাকুরী প্রদান করেছে বলে জানায়।
তার টার্গেটই ছিলো বিভিন্ন এলাকার সহজ সরল ব্যক্তিদের। তার প্রতারণার মূল কৌশল ছিল সে প্রথমে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভ্রমন ভিসায় বিদেশে নিয়ে যেত তারপর তার অন্য ব্যক্তির নামধারী পাসপোর্ট দিয়ে ভূয়া আকামা (ওয়ার্ক পারমিট) করে দিত।
এই আকামা করে দেয়ার জন্য ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিপুল টাকা আদায় করে নিত। ভ‚য়া আকামার কারণে ভিকটিম সৌদি আরবে পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস করত।
ইতোমধ্যেই সে জনৈক ভূক্তভোগীকে সৌদি পাঠানোর কথাবলে তার কাছ থেকে ১৯ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং পরবীর্ততে সে ভূক্তভোগীকে একটি জাল ভিসা মাধ্যমে সৌদিআরব পাঠিয়ে দেয়।
উক্ত জাল ভিসা নিয়ে ভক্তভোগী সৌদিআরব প্রবেশ করলে সৌদিআরব পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং সৌদি আদালত তাকে ২৭ মাস জেল প্রদান করে।
পরবর্তীতে ভূক্তভোগী ২৭ মাস জেলে থেকে তার পরিবারের সহায়তায় আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে সৌদিআরব জেল হতে গত ৫ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসে।
দেশে ফিরে ভূক্তভোগী, আসামী শাহ মোঃ আলী শাওন এর পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তারা বিষয়টিকে কোনরুপ গুরুত্ব না দিয়ে ভূক্তভোগীকে প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে ভূক্তভোগী বিভিন্ন মাধ্যমে শাহ মোঃ আলী শাওন এর সাথে যোগাযোগ করলেসেও তার পরিবারের মত একইভাবে ভূক্তভোগীকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি প্রদান করে এবং বিষয়টি নিয়ে চুপ থাকতে বলে।
যার কারনে ভূক্তভোগী কয়েকবার বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা করেও তার কোন সু-ফল পাইনি।
এরই মধ্যে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর আসামী শাহ মোঃ আলী শাওন(৩৫) বাংলাদেশে আসে এবং তার বাংলাদেশে আসার খবর পেয়ে গত ১৬ জানুয়ারি ভূক্তভোগী তার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে তার সাথে পুনরায় কথা বলতে গেলে সে তাকে আবারও বিভিন্ন হুমকি ধমকি প্রদান করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
এ অবস্থায় ভ‚ক্তভোগী গত ২২ জানুয়ারি র্যাব-১১,সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা একটি ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মাঠ পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে অবশেষে ২৬ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানাধীন বল্লভপুর, ১নং কালীর বাজার থেকে প্রতারক শাহ মোঃ আলী শাওন কে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রতারক শাহ মোঃ আলী শাওন কোতয়ালী থানার বল্লভপুর গ্রামের মোঃ আলী আজগর এর ছেলে।
আটককৃতের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় মানব পাচার আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।