স্টাফ রিপোর্টার।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা হয়েছে কুমিল্লা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সম্প্রতি কারাগারে মারা যাওয়া বন্দি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার ঝাঁকুনিপাড়া গ্রামের মো. আলমগীর হোসেনের স্ত্রী নাছিমা বেগম।
দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিনা চিকিৎসায় তার স্বামী মো. আলমগীর হোসেনের মৃত্যুর অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শাহজাহান আহম্মেদ, জেলার মো. আসাদুর রহমান, ডেপুটি জেলার (হাজতি ভর্তি শাখা) মো. আরিফুল ইসলাম ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিবাদি করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার (১০ অক্টোবর) পর্যন্ত আদালতের আদেশ থানায় পৌঁছেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বাদি ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার চান্দিনা থানা পুলিশ গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৭০ বোতল ফেনসিডিলসহ মো. আলমগীর হোসেনকে (৫২) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে প্রেরণ করে। তিনি বুকে ব্যাথাজনিত কারণে গত ১ মে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিন কারাগারের চিকিৎসকের নির্দেশে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসায় অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কুমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকা মেডিকেল/জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে চিকিৎসার জন্য গত ৯ মে রেফার করেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকা না পাঠিয়ে কারাগারে ফেরত নিয়ে বন্দি রাখে। এ অবস্থায় হৃদরোগের ব্যাথা ও যন্ত্রণা নিয়ে অযত্ন অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় গত ৩১ মে আলমগীর হোসেন কারাগারে মারা যান বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
মামলার বাদি মৃত মো. আলমগীর হোসেনের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, গত ৩১ মে দুপুরে কারা কর্তৃপক্ষের নিকট তিনি তার স্বামীর মৃত্যুর খবর পান এবং ময়নাতদন্তের পর লাশ গ্রহণ করে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন। কারা কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় ২২ দিন বিনা চিকিৎসায় বন্দি রেখে তার স্বামীকে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি কাগজপত্র সংগ্রহ করে কারাগারের ওই ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ১ নভেম্বর আদালতে মামলাটি (সিআর- ৮৬৭/২০২১) দায়ের করেন বলে জানান। এ মামলায় সরকারি কর্মকর্তাসহ ২০ জনকে স্বাক্ষীভুক্ত করা হয়েছে।
মামলার বাদিপক্ষের অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া জানান, আদালত বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে (১০ নভেম্বর) এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, মামলার বিষয়টি জানা নেই, কোনো কাগজপত্র পাইনি। তবে ওই বন্দিকে ঢাকায় রেফার করা হয়নি, তার এনজিওগ্রাম করতে বলা হয়েছিল। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইজি অফিসে আবেদন করেছি, কিন্তু অনুমোদনপত্র পাওয়ার ৫-৬ দিন আগেই তিনি মারা যান। তার চিকিৎসায় কোনো অবহেলা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম জানান, আদালতের আদেশ এখনো হাতে পাইনি, পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(সূত্র আজকের কুমিল্লা ডট কম)