নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।
কুমিল্লার নানুয়াদিঘির পাড়ে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার ঘটনায় রিমান্ডে সিআইডিকে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন। ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের নাম বলেছেন তিনি। তবে তার দেওয়া কিছু তথ্য ‘স্পর্শকাতর’। যা যাচাই-বাছাই করছে সিআইডি একই সঙ্গে তার দেওয়া তথ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সম্পৃক্ততা আছে কিনা যাচাই-বাছাই করা হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গ্রুপগুলোতে ঘটনার বিষয়ে যেসব কথোপকথন হয়েছে, কারা কারা তাতে সম্পৃক্ত তা খুঁজে দেখবে সিআইডি।
সিআইডি সূত্রে জানা যায়, ইকবালের দেওয়া কিছু তথ্য স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ। যে তথ্যগুলো পাওয়া গেছে তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন। তথ্যগুলো ম্যানুয়ালি, ডিজিটালি ও টেকনিক্যালি। সেগুলো যাচাই-বাছাই শেষে পুনরায় রিমান্ডের প্রয়োজন হলে নেওয়া হবে।
দুই দফায় ১২ দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার (০৩ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কান্তি নাথের আদালতে ইকবালসহ চার আসামিকে হাজির করা হয়। চার আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড চায় সিআইডি। শুনানি শেষে তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার অপর তিন আসামি হলেন রেজাউল ইসলাম ওরফে ইকরাম, মাজারের সহকারী খাদেম মো. হুমায়ুন কবির সানাউল্লাহ ও আশিকুর রহমান মোহাম্মদ ফয়সল কুমিল্লা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইকবালসহ চার আসামিকে তৃতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে চেয়েছি আমরা।
তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ ইকবালের দেওয়া কিছু তথ্য স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ ম্যানুয়ালি, ডিজিটালি ও টেকনিক্যাল তথ্যগুলোর সঙ্গে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখবো।
আপাতত আমরা জিজ্ঞাসাবাদে না নিয়ে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছি। প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই শেষে যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে বাকি তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদ করবো গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়াদিঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় নগরের কয়েকটি মণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, রংপুরের পীরগঞ্জে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা প্রধান অভিযুক্ত ইকবালকে শনাক্ত করে পুলিশ।
২১ অক্টোবর ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২২ অক্টোবর তাকে কুমিল্লায় এনে ২৩ অক্টোবর আদালতে হাজির করা হয়। পরে ইকবাল, মাজারের দুই খাদেম ও ৯৯৯-এ কল করা ইকরামের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দ্বিতীয় দফায় ২৯ অক্টোবর ইকবালসহ চার আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।