ইয়াছিন আরাফাত
কুমিল্লার চান্দিনায় কিশোরীকে গলা কেটে হত্যার তিন দিন পর পিতা সোলেমান ব্যাপারীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) ভোরে চান্দিনা উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। আহত সোলেমান ব্যাপারী (৪৫) ওই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তার মেয়ে সালমা আক্তার হত্যা মামলার বাদী। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন সোলেমান ব্যাপারী।
এদিকে সোলেমান এর মেয়ে সালমা আক্তার হত্যা মামলার কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকাবাসী এব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়- চান্দিনার বসন্তপুর গ্রামের সোলেমান ব্যাপারী ও তার ভাতিজাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জের ধরে গত শনিবার(২৫ সেপ্টেম্বর) তার ভাতিজারা সোলেমান ব্যাপারীর স্ত্রীকে মারধর করায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার (১ অক্টোবর) রাতে সোলেমান এর মেয়ে সালমাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ পুকুরের ফেলে দেয়। ওই ঘটনায় নিহতের পিতা সোলেমান বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা করেন। সোমবার সন্ধ্যা থেকে সোলেমান ব্যাপারীকে খুঁজে পাচ্ছিল না পরিবার। মঙ্গলবার ভোরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে আহতাবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
সোলেমান ব্যাপারীর বড় মেয়ে এলমা আক্তার জানায়, সোমবার রাত ৮টায় বাড়ির পাশের ইউনুছ এর দোকানে যাওয়ার পর থেকে আব্বাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। মোবাইলে কল দিয়েও বন্ধ পাই। পরবর্তীতে আমরা থানায় খবর দেই। পুলিশ এসেও বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে চলে যায়। মঙ্গলবার ভোরে গ্রামের এক লোক জমিতে কাজ করতে যাওয়ার পথে বাড়ির পাশের একটি বাগানে আব্বার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ও গলায় কাটা অবস্থায় দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেন।
সালমা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুজন দত্ত জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বাদী সোলেমানকে নিয়ে থানায় হাজির হতে ওয়ার্ড মেম্বার ইসমাইল হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর মেম্বার জানান, সোলেমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাতে সোলেমান এর পরিবার থানাকে অবহিত করলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েও তাকে খুঁজে পাইনি।
গল্লাই ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার ইসমাইল হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, আহতকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে আশঙ্কা মুক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এর আগে তার মেয়েকে হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা সকলে পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।