আজ ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪, দুপুর ১২:৩৮

শামীম জাহিরের পরিকল্পনায় এটিএম বুথে ডাকাতি।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

সিলেট প্রতিনিধি।

সিলেট প্রবাসফেরত শামীম আহমেদ ও শাফি উদ্দিন জাহিরের পরিকল্পনায় সিলেটে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) এটিএম বুথ ভেঙে ডাকাতি। ডাকাতরা ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা লুট করে নেয়।

লুণ্ঠিত টাকার ১০ লাখ ৮ হাজার উদ্ধার হলেও এখনো ১৪ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা যায়নি।
তবে ওই টাকার চার লাখ এখনো শামীমের অ্যাকাউন্টে বাকি টাকাগুলো জুয়া খেলা ও পরিবারের পেছনে খরচ করেছেন তারা বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য দেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।


তিনি বলেন, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী শামীম জাহির। শামীম বিদেশেও এটিএম বুথ ডাকাতির ঘটনায় আট বছর কারাবাসে ছিল শামীম ওমানে থাকাবস্থায় দুবাইয়ে থাকা জাহিরের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে জাহিরের সঙ্গে মিলে চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়ায়। তাদের দু’জনের পরিকল্পনাতেই চারজন মিলে লুট করে ইউসিবির ওই এটিএম বুথ।

এর আগে ১৮ আগস্ট তারা দস্যুতার ঘটনা ঘটিয়েছিল শ্রীমঙ্গলের আজমিরী ফ্লাওয়ার মিলে। ২০১৩ সালে শামীম ও জাহির মিলে সিলেট থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি করে।

তিনি বলেন ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবক’টি ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেদিন বুথের ভেতরে একটা মাত্র ক্যামেরা ছিল। যেটা দেখে আমরা চারজনের উপস্থিতি নিশ্চিত হই। তবে এটিএম মেশিনের ভেতরে একটা হিডেন ক্যামেরায় রেকর্ড হচ্ছিল না।

ব্যাংকে লেনদেনকারিরাও বুঝতে পারেন না হিডেন ক্যামেরা কোথায় লাগানো। কিন্তু লুণ্ঠনকারীরা বুথে ঢুকেই হিডেন ক্যামেরায় স্প্রে করতে দেখা গেছে। বুথের অন্য ক্যামেরাগুলো কালো স্প্রে করে বন্ধ করে দেয়। তাতে বোঝা যায় তাদের সবাই পেশাদার ডাকাত।

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে চিন্তার উদ্রেক ছিল, এ গ্রুপটাকে ধরতে না পারলে দেশের অন্যান্য এটিএম বুথগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকটা দুর্বল হয়ে যাবে। সে লক্ষ্যে অন্যান্য সংস্থারও সাহায্য চাই। ডিএমপি ডিবিও আমাদের সঙ্গে কাজে যোগ দিয়ে গত পরশু হবিগঞ্জ থেকে তিনজন আসামিকে ধরে হন্তান্তর করেছে। বুধবার এ বিষয়ে ডিএমপি ডিবির যুগ্ম কমিশনার এ বিষয়ে বিস্তারিত মিডিয়ার কাছে উপস্থাপন করেছেন।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাহিরকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে সিলেট জেলা পুলিশ। এ নিয়ে চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, বুথের নিরাপত্তায় আমাদের পরামর্শগুলো ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বুথের উপরে ব্যাংকের শাখা ছিল। যে কারণে ৩০ লাখ টাকা বুথে দেওয়ার দরকার ছিল না। এছাড়া ভবনের দু’তলায় ব্যাংকে অস্ত্রধারী পাহারাদার ছিল। কিন্তু পাহারাদারদের মধ্যে সমন্বয়ও ছিল না। তারা রাতে পাহারা দেওয়ার বদলে ঘুমাচ্ছিলেন। এ ঘটনার পর সব থানা পুলিশকেও বলে দিয়েছি, পাহারাদারদের নজরদারিতে রাখতে।


গত ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর নতুন বাজারস্থ ইউনুছ ম্যানশনের নিচতলায় থাকায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের এটিএম বুথ ভেঙে ২৪ লাখ সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা লুট করে ডাকাতরা। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে মামলা করে।

ঘটনার তদন্তে নেমে বুধবার ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এটিএম ব্যাংক লুটের ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শামীম আহমেদ, নুর মোহাম্মদ সেবুল ও আব্দুল হালিমকে। তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ আট হাজার টাকা, দু’টি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি প্লার্স ও মাথায় ব্যবহারের তিনটি কাপড়ের টুকরো জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন, গত ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর টানা তিন দিন হবিগঞ্জ শহরের একাধিক স্থানে অভিযান চালানো হয়। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর থানার পাঁচপাড়িয়া গ্রাম থেকে সাফি উদ্দিন জাহিরকে (৩৮) গ্রেফতার করা হয়। জাহির পাঁচপাড়িয়া গ্রামের মমতাজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে।

তার দেওয়া তথ্য অনুসারে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি পালসার মোটরসাইকেল ও ঘটনাস্থলের পাশ থেকে বুথের মেশিন ভাঙার শাবল জব্দ করা হয়।

এটিএম বুথ লুটের ঘটনা দেশে বিরল। এ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে লিখিত পরামর্শ দেন পুলিশ

এনইউ/আরবি

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০