মোঃ হুমায়ুন কবির মানিক।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ভূমি নিবন্ধন কার্যক্রমের স্বচ্ছতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ উপজেলায় স্থায়ী ভাবে নিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রারের সক্রিয় কার্যক্রমে জনসাধারণের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটেছে। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে মনোহরগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রার পদটি শূন্য থাকায় রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছিলো সরকার। পাশাপাশি জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও পোহাতে হয়েছে চরম ভোগান্তি।
ফলে গত কয়েক বছর ধরে মনোহরগঞ্জে সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে একজন সৎ, যোগ্য সাব রেজিস্ট্রার স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলো স্থানীয় বাসিন্দারা জানা যায়, মনোহরগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় পাশবর্তী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রারকে দিয়ে চলতো এ উপজেলার ভূমি নিবন্ধন কার্যক্রম।
অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সপ্তাহে এক/দুইদিনের বেশি উপস্থিত থাকতেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার। ফলে নির্দিষ্ট দিনে জমি রেজিস্ট্রি না হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন। ভূমি নিবন্ধনে সময়ক্ষেপণের কারণে রাজস্ব বঞ্চিত হতো সরকার।
এমতাবস্থায় মনোহরগঞ্জে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মনোহরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে স্থায়ী ভাবে একজন সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া হয়। ফলে এ উপজেলায় জনসাধারণের ভোগান্তির অবসান ঘটে সক্রিয়তা ফিরে আসে ভূমি নিবন্ধন কার্যক্রমে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মনোহরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা রয়েছে। স্থায়ী ভাবে নিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রার নুরজাহান রহমান সেবাগ্রহিতাদের সাথে সবসময় সদাচরণ করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়কে ঘিরে বিভিন্ন ধরণের অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও কুমিল্লার প্রত্যন্ত অঞ্চল মনোহরগঞ্জের বাসিন্দারা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে গিয়ে অনিয়মের শিকার হতে হয় না।
নবনিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রার নুরজাহান রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের মোঃ মজিবুর রহমানের মেয়ে। তিনি ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নন-ক্যাডার পদে ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর মনোহরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি এ উপজেলায় ভূমি নিবন্ধন সেবায় জনভোগান্তি দূরীকরণে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের কান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী শাহাজাহান, বিপুলাসার ইউনিয়নের কাঁচি গ্রামের পারভেজ মোশারফ ও লক্ষণপুর ইউনিয়নের বানঘর গ্রামের বেলাল হোসেনসহ মনোহরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে আসা বেশ কয়েকজন সেবাগ্রহীতার সাথে কথা হলে তারা জানান, ক্রয়কৃত সম্পত্তি নিজের নামে নিবন্ধন করতে তারা মনোহরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে গিয়ে দ্রুত সময়ে নিবন্ধন করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তাদেরকে কোনো প্রকার ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে স্থায়ী ভাবে সাব-রেজিস্ট্রার নিযুক্তের পর থেকে মনোহরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ কোনো ধরণের জনভোগান্তির অভিযোগ নেই। কার্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থেকে ভূমি নিবন্ধন সেবাকে সুলভ করেছেন সাব-রেজিস্ট্রার নুরজাহান রহমান।