আজ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪, রাত ১২:০২

বুড়িচংয়ে মা ও ভাবীর সামনে আগুনে পুড়ে মরলো শেকলবন্দী কলেজছাত্র আহত ৩-৪জন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার খাড়েরায় আগুনে পুড়ে শেকলে বন্দী মানসিক ভারসাম্যহীন এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। হত ভাগ্য মা ও ভাবীর সামনে আগুনে পুড়ে মারা গেল কলেজ ছাত্র মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ছাত্র। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নের খাড়েরা পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কলেজ ছাত্রের নাম আলাউদ্দিন (১৯)। সে ওই এলাকার চটপটি বিক্রেতা আবদুল মমিনের পুত্র এবং পার্শ্ববর্তী কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলো। তাকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে তার বন্ধু খলিল মিয়ার ছেলে মামুন (১৮) নিহতের মা হেলেনা বেগম (৪৫), ভাবী সহ ৩-৪ জনে আগুনে পুড়ে আহত হয়েছে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুড়িচং থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন। পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, কলেজ ছাত্র আলাউদ্দিন গত প্রায় তিনমাস পূর্বে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এ জন্য তাকে ঘরের ভেতর শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই ঘরের বৈদ্যুতিক মিটার থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে পুরো ঘর পুড়ে যায়। এ আগুনে পুড়ে প্রাণ যায় আলাউদ্দিনের। ‘পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের অনুরোধে এবং মানবিক কারণে’ তার লাশ স্বজনদের কাছে দিয়ে আসা হয় বলেও জানান ওসি আলমগীর।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমেদ জানান, খাড়েরা গ্রামের আবদুল মতিন তার অন্যান্য সন্তানদের সাথে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চটপটি বিক্রি করেন। করোনাকালে কলেজ বন্ধ থাকায় এ তাকে সহায়তা করতো আলাউদ্দিন। কিন্তু গত প্রায় ৩ মাস পূর্বে হঠাৎ তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। কারণে-অকারণে সে ‘পাগলামো’ করতে থাকে। এরপর থেকে তাকে ঘরের ভেতর শেকলে বেধে রাখা হতো। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে হঠাৎ তাদের ঘরে আগুন লাগে। এসময় বাড়িতে কেবল তার মা, বড় ভাই এবং ভাইয়ের বউ ছিলো। তাদের শোর চিকৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আলাউদ্দিনকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। সেই সাথে খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে। পরে প্রায় ঘন্টাখানেকের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততোক্ষণে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আগুনে পুড়ে মারা যায় আলাউদ্দিনও।
এসময় আগুনে ঘরে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা, দুটি ঘর , মালামাল সহ প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বুড়িচং থানার ওসি আলমগীর হোসেন, ওসি তদন্ত মোঃ মাকসুদুল আলম, এস আই শরীফুর রহমান, সহ পুলিশের একটি দল। সেখানে গিয়ে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের অনুরোধে মানবিক কারনে লাশ দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে রেখে আসেন তারা।
খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কুমিল্লা -৫ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড.আবুল হাসেম খাঁন। তিনি নিহতের পরিবারে প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। এমপি আবুল হাসেম খাঁন তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহতের পিতা মাতা কে নগদ এক লক্ষ টাকা, তিন বান ঢেউ টিন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি সরকারি ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্য সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
অপর দিকে সকালে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাম্মৎ সাবিনা ইয়াসমিন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি শোকাবহ পরিবারকে সমবেদনা জানান। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাম্মৎ সাবিনা ইয়াসমিন জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী ৪ বস্তা। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা মাঈদুল মোর্শেদ মুরাদ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল করিম। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল করিম তার নিজ তহবিল থেকে নিহতের পিতা মাতা কে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। আরও সাহায্য সহযোগিতা করার আশ্বাসও দেন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০