আজ ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪, সন্ধ্যা ৭:১৫

প্রতিবন্ধী পত্রিকা হকারের পাশে দাড়ালেন এসপি বিপ্লব কুমার সরকার।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

রফিকুল ইসলাম।

জাহাঙ্গীর হোসেন। বয়স চল্লিশের কোঠায়। জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। মা আছেন, বাবা নেই। একসময় বিয়েও করেছিলেন কিন্তু অভাবের কারণে বউ ছেড়ে চলে গেছে। আগে মানুষের কাছে ভিক্ষে করে জীবিকা নির্বাহ করতেন কিন্তু হঠাৎ তার উপলব্ধি হয় ভিক্ষে করার চেয়ে না খেয়ে মরা ভালো। তাই বিকল্প কাজের সন্ধানে নেমে পড়েন।

এক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে শুরু করেন পত্রিকার হকারের কাজ। রংপুর শহরের প্রেসক্লাব, জাহাজ কোম্পানি মোড়, পায়রা চত্ত্বর প্রভৃতি স্থানে ফেরি করে বেড়ান দেশ বিদেশের খবর। প্রথম প্রথম লোকজন একটু অবজ্ঞার চোখে দেখলেও ধীরে ধীরে সকলের প্রিয় হয়ে উঠে সে। অনেক দোকানদার তার রেগুলার কাস্টমার বনে যায়। এভাবে পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে দিব্যি চলে যাচ্ছিলো জাহাঙ্গীরের দিনগুলি।

হঠাৎ করোনার বিষাক্ত ছোবলে এলোমেলো হয় জাহাঙ্গীরের পৃথিবী। লকডাউনে বন্ধ হয় দোকান-পাট, মানুষের আনাগোনা। জাহাঙ্গীরের বেচাকেনাও কমে যায়। একসময় হাতের জমানো টাকাও ফুরিয়ে আসে। কিন্তু হাল ছাড়ে নি সে। লকডাউন শিথিল হলে আবারও পত্রিকা হাতে নেমে পড়ে সে।

জরাজীর্ণ কাপড়, বিবর্ণ চেহারার জাহাঙ্গীর পত্রিকা নিয়ে কারও সামনে আসলে অনেকেই ভিক্ষুক ভেবে টাকা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সে স্মিত হেসে সকলকেই বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দেয়। পত্রিকা ছাড়া কারও কাছ থেকে টাকা নেয় না। প্রতিবন্ধী হলেও সে ভিক্ষা করতে চায় না, শত অভাবেও মাথা উচু করে বাচতে চায়।

জাহাঙ্গীরের এই লড়াকু গল্প শুনে তাকে পুলিশ অফিসে ডেকে আনেন বাংলাদেশ পুলিশের আইকন, রংপুর জেলা পুলিশের অভিভাবক, মানবিক পুলিশ সুপার জনাব বিপ্লব কুমার সরকার বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়। জাহাঙ্গীর এসময় পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট তার লড়াকু জীবনের গল্প তুলে ধরেন।

জাহাঙ্গীরের গল্প শুনে পুলিশ সুপার মহোদয় অভিভূত হন। তিনি বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি মানুষের পরিচয় হতে পারে না, কর্মই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়। জাহাঙ্গীর প্রতিবন্ধী হয়েও ভিক্ষা না করে সাহসী এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এসময় তিনি জাহাঙ্গীরের বর্তমান অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থার খোজ নেন।

জাহাঙ্গীর তার পুজি হারিয়ে এখন আর আগের মতো পত্রিকা কিনতে পারছে না বলে জানায়। তাছাড়া অর্থের অভাবে সে ও তার মা খাদ্য ও বস্ত্র সংকটে আছে। সব শুনে পুলিশ সুপার মহোদয়।

জাহাঙ্গীরকে পত্রিকা কেনার জন্য কিছু পুজি এবং তার ও মায়ের খাদ্য বস্ত্র কেনার জন্য কিছু অর্থ উপহার দেন। এসপি বিপ্লব কুমার সরকারের এই মহানুভবতা দেখে আনন্দে কেদে ফেলেন জাহাঙ্গীর এবং এজন্য তিনি পুলিশ সুপার মহোদয়ের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জয় হোক মানবতার, জয় হোক জাহাঙ্গীরের লড়াকু জীবনের!

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০