নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে পরীক্ষা দেওয়া মো. শাকিল এইচএসসি পাস করেছেন। তিনি জিপিএ ৪.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন শাকিল দাউদকান্দি উপজেলার জিংলাতলী ইউনিয়নের জিংলাতলী গ্রামের শাহজালাল মিয়ার ছেলে। উপজেলার ড. খন্দকার মোশারফ ফাউন্ডেশন কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি পরীক্ষায় অংশ নেন।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে দাউদকান্দি উপজেলার জিংলাতলী ইউনিয়নে।
নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেন মো. শাকিল (২০)। ১ ডিসেম্বর প্রতিপক্ষ ঘোড়া প্রতীকের লোকজন একা পেয়ে শাকিলের ওপর হামলা চালায়। এতে তার দুই পা ভেঙে যায়। প্রথমে শাকিলকে গৌরীপুর হাসপাতালে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে তার পায়ে অপারেশন করা হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে থেকে এইচএসসির সব পরীক্ষা দেন শাকিল।
শাকিল বলেন, ভেবেছিলাম হয়তো আর বাঁচবো না। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছি। অনেক কষ্ট করে শুয়ে শুয়ে পরীক্ষা দিয়েছি। খাতায় লিখতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল। আমার এই প্রতিকূল অবস্থা যারা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
শাকিলের মা তাজ মেহের বেগম বলেন, আমার ছেলেকে এইচএসসি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া ও পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পেছনে যাদের অবদান রয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ড. খন্দকার মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজের অধ্যাপক আব্দুর রহমান বলেন, শাকিল আমাদের প্রতিষ্ঠানের মানবিক বিভাগের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় শাকিলের দুটি পা ভেঙে যায়। আমি চেষ্টা করেছি ওকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য এবং তাকে অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রতিটি পরীক্ষা অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেই। শাকিল মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। আমরাও বেশ খুশি।