দেলোয়ার হোসেন জাকির।
৭০ বছর বয়সি বৃদ্ধ বাবা মাহে আলম। সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় নিজের ছেলের হাতে শারীরিক ও মানুসিকভাবে নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ছেলে রাসেল মিয়ার হাতে বৃদ্ধ মাহে আলমের নির্যাতন ও মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
গত ১০ নভেম্বর নির্যাতনের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি নজরে আসে কুমিল্লা জেলা পুলিশের। পরে পুলিশ রাসেল মিয়াকে আটক করে। কিন্তু ছেলের নির্যাতনে গুরতর অসুস্থ হয়েও হয়েও বাবা মাহে আলম কোন মামলা না দিয়ে উল্টো পুলিশের কাছে অনুরোধ করেন ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে। এটি কুমিল্লা নগরীর ১৭নং ওয়ার্ডের সুজানগর এলাকার ঘটনা।
স্থানীয়রা জানায়, সুজানগর এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ মাহে আলমকে তার ছোট ছেলে মোঃ রাসেল মিয়াকে সম্পত্তি লিখে দিতে দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিয়ে আসছিল। গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাসেল তার বাবা মাহে আলমকে চকবাজার মার্কেট ও বাড়ির জায়গা নিজ নামে লিখে দিতে বলে। না দেওয়ায় বাবা মাহে আলমকে মারধর করতে থাকে ছেলে রাসেল।
এক পর্যায়ে মাহে আলমকে টেনে হিচড়ে খাটের উপর ফেলে কিল ঘুষি মারতে থাকে। ঘটনাটি মাহে আলমের অন্য ছেলে মেয়েরা ভিডিও করলেও নিজ বাবাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি কেউ। পরে নিজ ছেলের হাতে পিতার নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানায়, পিতাকে নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি’র সহধর্মিনী ও পুনাক সভানেত্রী জীশান মির্জার নজরে আসে।পরে তিনি কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদকে বিষয়টি খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য আহবান করেন এবং মাহে আলমের জন্য উপহার পাঠান। সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ মাহে আলমকে দেখতে তার বাসায় যান। তাকে সান্ত¡না দেন এবং আইজিপি’র সহধমিনীর দেওয়া উপহার তুলে দেন।
পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, সন্তানের প্রতি মাহে আলমের মতো বাবার এই মমত্ববোধ সমাজে উদাহরণ হয়ে থাকবে। বাবাকে নির্যাতন এই ধরনের ঘটনা যেন পূণরাবৃত্তি দ্বন্দ্বে না ঘটে সেই পারিবারিক বন্ধনকে আরও সৃদৃঢ় করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার, কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আনওয়ারুল আজিম।