নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।
কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় স্বজনদের আহাজারি ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে বেড়ে ওঠা লিমা, তাসফিয়া ও মীমের। পড়াশোনা থেকে খেলাধুলা সবই একসঙ্গে করতো তিন বান্ধবী। আজ স্কুলে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে একসঙ্গেই পরপারে পাড়ি জমালো কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এই তিন শিশু। এতে ভেঙে গেলো তিনটি পরিবারের স্বপ্ন।
বুধবার (৯ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বিজয়পুর লেভেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো- বিজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মো. মাসুম মিয়ার মেয়ে মীম, একই এলাকার রিপন মিয়ার মেয়ে রিমা আক্তার এবং রোজিনা আক্তারের মেয়ে তাসফিয়া আক্তার।
এদিকে, একসঙ্গে তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামজুড়ে চলছে শোকের মাতম প্রত্যক্ষদর্শী আবুল কালাম বলেন, বিজয়পুর রেলক্রসিং দিয়ে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিন বান্ধবী একসঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল। এসময় চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মীম ও রিমার মৃত্যু হয়। তাসফিয়া ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে ছিটকে পড়ে সেও মারা যায়। পরে উত্তেজিত জনতা রেললাইন ও কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন।
তাসফিয়া আক্তারের মা রোজিনা আক্তার বলেন, মীম, রিমা এবং তাসফিয়া ছোট থেকেই একসঙ্গে খেলাধুলা ও পড়ালেখা করতো। আজ শেষ বিদায় নিয়েছে একসঙ্গে। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বিলাপ করে তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন ধুলায় মিশে গেছে।
এদিকে, তিন শিশুর মৃত্যুর খবরে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঘটনাস্থল ও নিহতদের বাড়ি পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে তিন পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও তিনি জানান।