নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লায় প্রায় কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর সদস্যরা জানা যায়, বুড়িচং উপজেলার শতাধিক সাধারণ পেশাজীবি মানুষ একটি প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ব্যবসায়ে লভ্যাংশ প্রাপ্তির আশায় প্রায় কোটি টাকা অর্থ বিনিয়োগ করে সর্বশান্ত হয়েছেন। বেশির ভাগ মানুষ তাদের সারাজীবনের কষ্টার্জিত জমানো অর্থ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে এক লক্ষ টাকা হতে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুনাফার আশায় বিনিয়োগ করে সবাই সর্বশান্ত হয়েছেন। প্রতারক চক্রের সদস্যরা সাধারণ মানুষের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী জনগন তাদের গচ্ছিত টাকা ফিরে পাবার আশায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দাখিল করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা আইনি সহযোগিতা ও ন্যায় বিচার প্রাপ্তির আশায় র্যাবের হস্তক্ষেপ কামনা করে।
বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী একটি লিখিত অভিযোগ কুমিল্লাতে অবস্থিত র্যাব-১১ এর কার্যলয়ে এসে জমা দেয়। পরবর্তীতে তাদের প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার আদ্যপ্রান্ত অনুসন্ধান করে র্যাব এবং ভুক্তভোগীদের সর্বত্তক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ মে রাতে কুমিল্র বুড়িচংয়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূল হোতা মোঃ নজরুল ইসলামসহ (৪৮) সহযোগী আরও ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুমিল্লার বুড়িচংয়ের কন্ঠনগর গ্রামের সরাফত আলীর ছেলে মোঃ মামুনুল হক (৪৮), বুড়িচংয়ের মোঃ সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোঃ গিয়াস উদ্দিন (৪৭), ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চারাধারী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৮) এবং একই উপজেলার পরিহলপাড়া গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৮)।
জানা যায়।
গত ২০১৩ সালে জানুয়ারি মাসে কুমিল্লার বুড়িচং বাজার এলাকায় ফেমাস হাউজিং নামক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে একটি প্রতারক চক্র। উক্ত চক্রের মূল হোতা মোঃ মামুনুল হক নিজে কোম্পানীর চেয়ারম্যান এবং মোঃ নজরুল ইসলামকে সহকারী পরিচালক হিসেবে একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে এবং ০৮ জন জনবলের সমন্বয়ে পরিচালনা পরিষদ গঠন করে। ৩ জন পরিচালক এবং মাঠ পর্যায়ে একাধিক কর্মী নিয়োগ দেয়।
পরবর্তীতে বুড়িচং উপজেলার জনবহুল ও ব্যবসায়ীক এলাকায় কর্পোরেট অফিস ইউ.পি রোড (বাজার মসজিদ সংলগ্ন) বুড়িচং, কুমিল্লা এবং পরিচালনায়ঃ ফেয়ার গোল্ড রিয়েল এস্টেট এন্ড ডেভেলপমেনট লিঃ, ১১১৫, মৌলভী ভিলা (৩য় তলা), রেইসকোর্স, কুমিল্লা জাকজমকপূর্ণ শাখা অফিস স্থাপন করে। পরবর্তীতে প্রতারকচক্রটি অতি সুকৌশলে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষের নিকট হতে আমানত সংগ্রহ করে।
সহজ সরল সাধারণ জনগণকে ভুল বুঝিয়ে তাদের সংস্থার সদস্য করা হত। প্রতি মাসে তাদের সংস্থায় একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা করে ০৫ বছরে টাকা জমা করলে পরবর্তীতে ০৫ বছর মেয়াদ শেষে তাদেরকে দ্বিগুন টাকা প্রদান করবে বলে আসস্থ করে। ০৫ বছর শেষে একজন গ্রাহক যত টাকা জমা করবে ০৫ বছর শেষে লাভসহ সেই টাকার দ্বিগুন টাকা পরিশোধের কথা থাকলে ও তারা টাকা পরিশোধ না করে তাদের অফিস ও বিভিন্ন স্থাপনা গুটিয়ে উধাও হয়ে যায়।
এ বিষয়ে গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে কুমিল্লার বুড়িচং থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।