আজ ৫ই মে, ২০২৪, রাত ১২:২৮

কুমিল্লার মনোহরগন্জে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

মো: হুমায়ুন কবির মানিক l

কুমিল্লার মনোহরগন্জে মারিয়া আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ওই গৃহবধু উপজেলার ঝলম (দক্ষিণ) ইউনিয়নের বচইড় গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আমান উল্লাহ’র স্ত্রী।
স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং দেবর-ননদ মিলে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে বলে ওই গৃহবধু মারিয়ার বাবার অভিযোগ।

এইঘটনায় বুধবার (১১ আগষ্ট) পুলিশ ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় নিহত গৃহবধুর বাবা লাকসাম উপজেলার বেতিহাটি গ্রামের মোর্শেদ আলম মনোহরগন্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

নিহতের পারিবারিক (স্বামীর বাড়ি) সূত্রে জানা গেছে, আগেরদিন মঙ্গলবার (১০ আগষ্ট) দুপুরে ওই গৃহবধুর সঙ্গে স্বামী, শাশুড়িএবং ননদ এবং দেবরের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হয়। ওই ঝগড়া-বিবাদের জের ধরেই ওই গৃহবধু বিষপানকরে। পরে তাকে প্রথমে মনোহরগন্জ উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়।

এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তারউন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তারা কুমিল্লায় এবংঅবশেষে রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হলে সেখানে ওই গৃহবধু মারা যায়।

এদিকে নিহত গৃহবধুর বাবার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুরইউনিয়নের বেতিহাটি গ্রামের মোর্শেদ আলমের একমাত্র মেয়ে মারিয়া আক্তারের সঙ্গে পাশবর্তী মনোহরগন্জ উপজেলার ঝলম (দক্ষিণ) ইউনিয়নের বচইড় গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আমান উল্লাহ’র বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িদেবর-ননদসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন প্রায় সময় মারিয়ার পরিবারের কাছে বিভন্ন আসবাবপত্র এবং ব্যবসার জন্য দুই লাখ টাকাদাবি করে আসছে। এতে ওই গৃহবধুর পরিবার এসব দাবি পূরন করতে অস্বীকৃতি জানালে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নানা অজুহাতে গৃহবধুকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে চরম নির্যাতন করতো।

মঙ্গলবার (১০ আগষ্ট) ওই নির্যাতনের বলি হয়েছে গৃহবধু মারিয়া নিহত মারিয়ার মা ফাহিমা আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার মেয়েকে নানা অজুহাতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে চরম নির্যাতন করতো।

তিনি জানান, ঘটনার দিন রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার দিকে মারিয়ার স্বামী আমান উল্লাহ জানায়, মারিয়া খুব অসুস্থ। কি যেন খেয়েছে। সম্ভবত বিষ। আমি তাকে নিয়ে কুমিল্লায় একটি হাসপাতালে এনেছি। এর কিছুক্ষণ পর আমি মারিয়ার অবস্থা জানতে চাইলে সে ( স্বামী) জানায় তাকে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছি। একপর্যায়ে রাত অনুমান পৌনে দুইটার দিকে জানতে পারি আমার মেয়ে মারাগেছে। নিহত মারিয়ার এক বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

তিনি আরো জানান, তার মেয়ের ওপর নির্যাতনের কারণে গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন শামীমসহ গণ্যমান্যবক্তিবর্গের মধ্যস্থতার একাধিক সালিশ-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ( ৫ আগষ্ট) আমার মেয়েকে তার স্বামী আমান উল্লাহ আমাদের বাড়ি থেকে তার বাড়ি (বচইড়) নিয়েযায়। সেখানে নেওয়ার পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এসব বিষয়ে তিনি গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন শামীমকে অবহিত করেন।

নিহত মারিয়ার বাবা-মায়ের দাবি তাঁদের মেয়েকে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে।
এই ব্যাপারে মনোহরগন্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহাবুল কবির জানান, নিহত ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১