আজ ২৯শে মার্চ, ২০২৪, বিকাল ৩:২৪

কুমিল্লার খামারিরা ভারতীয় গরুর প্রবেশ নিয়ে শঙ্কায়।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।

আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে খামারিদের মাঝে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সারাদেশে খামারিরা তাদের গরু-ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তেমনি ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী জেলা কুমিল্লার ১০হাজার খামারি প্রায় দুই লক্ষ আটচল্লিশ হাজার পশু কোরবানীর গবাদিপশু প্রস্তুত করেছে আসন্ন কোরবানির জন্য।

কোরবানির পশু প্রস্তুত করা কুমিল্লার খামারিদের অনেকে জানায়, সীমান্তবর্তী এই জেলায় ভারতীয় গরুর আধিক্য ঠেকানো না গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। এছাড়া ভারতীয় গরু এবং সঙ্গে আসা লোকদের মাধ্যমে ছড়াবে করোনা।

জানা যায় কুমিল্লার ৪২ কি.মি সীমান্তবর্তী বিভিন্ন উপজেলা দিয়ে আসে প্রায় শতভাগ গরু ভারতীয়। এসব গরু সীমান্তের বিভিন্ন পকেট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গরুর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় নাগরিকেরাও এ দেশে গরু নিয়ে প্রবেশ করছেন। ফলে করোনার ভারতীয় ধরণ আরও বড় আকারে ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে।

এদিকে কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুমিল্লার খামারিরা। খামারিরা বলছেন এবার জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পশু রয়েছে, তাই পাশের দেশ ভারত হতে গরু প্রবেশ করলে ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগও বলছেন এবার কুমিল্লাতেই পশু রয়েছে চাহিদার তুলনায় বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার দুই লক্ষ আটচল্লিশ হাজার পশু কোরবানীর চাহিদা আছে। তার বিপরীতে এবার পশু রয়েছে দুই লক্ষ আটান্ন হাজার চারশ বত্রিশটি। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন জেলায় কোরবানীর জন্য যে পরিমাণ পশু রয়েছর তাতে চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১০ হাজারের অধিক পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

জেলার সদর উপজেলার খামারি জাহিদ বলেন, আমরা গরুকে কোনো প্রকারের রাসায়নিক খাদ্য দিচ্ছি না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক দানাদার খাবার, ঘাস এসবই খাওয়ানো হচ্ছে। জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতির আরেকজন খামারী সোহাগ বলেন, আমার খামারে এই মুহূর্তে দেশী, শাহীওয়াল, ফিজিয়ান, ফিজিয়ান ক্রস জাতের গরু রয়েছে। আমার এখানে ৪০০ থেকে ১১০০ কেজি ওজনের পর্যন্ত গরু রয়েছে।

জেলার সদর উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের খামারী নুর আলম জানান, আমার খামারে ১‘শ এর অধিক বিক্রি উপযোগী গরু রয়েছে,যা আমি এবারের ঈদে বিক্রি করবো, ১লক্ষ থেকে ৫লক্ষ টাকা মূল্য পর্যন্ত গরু রয়েছে। শেষ মুহূর্তে বাজারে ভারতীয় গরু চলে আসলে আমাদের পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না, লোকশানে পড়তে হবে আমাদের। তাই সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন থাকবে ভারতীয় গরু যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার।

খামারীরা আরো অভিযোগ করে বলেন,এবার পশুর সঠিক দাম পেলে তাই আগামীতে গো-খামার আরো বাড়বে কিন্তু পশুর দাম না পেলে অনেক খামারী নিস্ব হয়ে পড়বে।

খামারীরা আরো জানান, এবার জেলার অনেক গ্রাম অঞ্চলে বড় ষাড় পালন করছেন ছোট-বড় খামারীরা। চড়া দামের খর, খৈল, গমের ভাত, কাচা ঘাস, ভুষি ও নালী, খাবার দিয়ে এসব গরু মোটা-তাজা করাহচ্ছে। তাদের এসব গরু ঈদ হাটে বিক্রি করে তারা লাভবান হবেন।

এছাড়া ঈদকে সামনে রেখে পশু কোরবানী নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগও নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর কুমিল্লার কর্মকর্তারা জানান এবার সঠিক পদ্ধতিতে পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো সংরক্ষণ বিষয়ে ৪৪৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাজার গুলোতে রাখা হচ্ছে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম এছাড়াও মনিটরিং করা হচ্ছে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণের সাথে জড়িত খামারীদেরও।

সার্বিক বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কোরবানীর ঈদকে ঘিরে এবছর আমাদের পর্যাপ্ত পশু মজুদ রয়েছে এবং উদ্বৃত্তও থাকবে। আমাদের এবার প্রায় ৮১ টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম বিভিন্ন উপজেলার হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাকে চাহিদমত সেবা দিবে। ইন্ডিয়া হতে এবার যাতে গরু না আসতে পারে সে ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আমরা কড়াকড়িভাবে বিষয়টি মনিটরিং করছি। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথেও এবিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১