ইয়াছিন আরাফাত।
কুমিল্লার চান্দিনায় পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামির লাশ বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে চান্দিনা থানা পুলিশ।
রবিবার (১৪ আগস্ট) সকালে উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের গল্লাই পশ্চিমপাড়া গ্রামের খারকান দীঘিরপাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত সেলিনা বেগম (৪০) ওই গ্রামের দিনমজুর নাছির উদ্দিন এর স্ত্রী।
জানা গেছে, একই এলাকার এক ব্যক্তির সাথে টাকা-পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত একটি মামলায় বিজ্ঞ আদালত নাছির উদ্দিন, তার স্ত্রী সেলিনা বেগম ও মেয়ে তানজিনা আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। গত মঙ্গলবার
(১১ আগস্ট) ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা চান্দিনা থানায় আসলে পুলিশ শনিবার (১৩ আগস্ট) রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করতে ওই বাড়িতে যায়। এ সময় একই ঘরে থাকা নাছিরের স্ত্রী সেলিনা বেগম প্রকৃতির ডাকের কথা বলে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান।
পুলিশ খোঁজাখুঁজি করে সেলিনা বেগমকে না পেয়ে নাছির উদ্দিন ও তার মেয়ে তানজিনাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
পরদিন রবিবার সকালে এলাকার লোকজন বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ওই নারীর মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সেলিনা বেগম এর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নাছির উদ্দিন জানান, রবিবার রাত দেড়টার দিকে পুলিশ আমার বাড়িতে গিয়ে আমাকে ডাক দিলে আমি দরজা খুলি। তখন পুলিশ জানায়, আমাদেরকে থানায় আসতে হবে, আমাদের নামে নাকি ওয়ারেন্ট আছে। এ সময় আমার স্ত্রী (প্রকৃতির ডাকে) বাইরে যাবে বলে ঘরে ঢুকে। কিছুক্ষণ পর আর আমার স্ত্রীকে পাওয়া যায়নি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ চলে আসার পর মামলার বাদী পক্ষ আমার স্ত্রীকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিতে পারে।
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, আমাদের পুলিশ গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি আটক করতে যায়। কিন্তু ওই নারী কৌশলে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ওই নারীর বসতঘরের পেছনে একটি পুকুরের পাড় অনেক উঁচু। হয়তো গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে পুকুরে পড়ে যেতে পারেন। পুকুরের মধ্যে অনেক ঝোঁপঝাড় থাকায় হয়তো উঠে আসা সম্ভব হয়নি তার।
তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমেক হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এছাড়া ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।