নেকবর হোসেন কুমিল্লা প্রতিনিধি।
কুমিল্লা নগরীর জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডে সকাল ৭টা থেকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন জামিল আহমেদ। তিনি ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করেন। বাড়িতে সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে শনিবার অফিস ধরবেন এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো গাড়ির দেখা না পেয়ে বিকল্প হিসেবে বেছে নেন মাইক্রোবাস। তবে মাইক্রোবাসের ভাড়া ১ হাজার টাকা। ১০ জন মিলে ১০ হাজার টাকায় রাজধানীর গুলিস্তান পর্যন্ত মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে উঠে পড়েন।
ওঠার আগে জামিল বলেন প্রতি সপ্তাহে ২০০ টাকা বাস ভাড়া দিয়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকা যাই। কোনো ঝামেলা থাকলে তখন ভাড়া আড়াইশ টাকা নেয়। এখন পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছি। গুলিস্তান নেমে আবার রিকশা বা অটোরিকশা কিছু একটায় অফিস যেতে হবে। সেখানেও বাড়তি খরচ।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, গত বুধবার রাত ১২টা থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে বেড়ে গেছে ১৫ টাকা। এতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরির মালিকরা শুক্রবার ভোর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরপর পরিবহন মালিক সমিতিও শুক্রবার থেকে বাস চালানো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকেই ভোগান্তিতে পড়েন সারা দেশের যাত্রীরা। বাসের পরিবর্তে ছোট যানবাহনে তাদের দূরপাল্লায় যাতায়াত করতে হচ্ছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শনিবার সকাল থেকেই যানবাহনের সংখ্যা ছিল বেশ কম। কোথাও কোথাও দুই-একটি বাস চলতে দেখা গেলেও যাত্রীর তুলনায় তা পর্যাপ্ত ছিল না। রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় যাত্রীদের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম, মিয়াবাজার, সোয়াগাজী, পদুয়ারবাজার, ময়নামতি সেনানিবাস, আলেখারচর, চান্দিনাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীর ভিড় বাড়তে থাকে।
ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত আবুল কালাম জানান, শুক্রবারের ছুটিতে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি এসেছিলেন। শনিবার অফিস খোলা। যেভাবেই হোক পৌঁছাতে হবে। নাহলে বেতন কাটা যাবে মহাসড়কের আলেখারচর পদুয়ারবাজার ও সেনানিবাস এলাকায় দেখা যায়, প্রায় অর্ধশত তরুণ মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা ভাড়ায় যাত্রী আনা-নেয়া করেন।
শাওন আহমেদ নামে একজন বাইক চালক নিউজবাংলাকে জানান, জনপ্রতি ১ হাজার টাকা নিচ্ছেন। এই ভাড়ায় প্রতিবার দুজন নিয়ে এক দিনে অন্তত পাঁচবার ঢাকা-কুমিল্লা যাতায়াত করছেন।
নিয়োগ পরীক্ষা দিতে মোটরসাইকেলে ঢাকায় যাবেন সৈয়দ আকিব হোসেন তিনি বলেন, শুক্রবার বাসের অভাবে ঢাকায় যেতে পারিনি। পরীক্ষাও দিতে পারিনি। আজকে ১ হাজার টাকায় বাইকে যাচ্ছি।
বাস চলাচলের বিষয়ে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, ‘রোববার কেন্দ্রীয় বৈঠকের আগে বাস চলাচল শুরু করা যাচ্ছে না।