আরিফ আজগর।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়স্থ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ২য় ধাপে ৮৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন। ৩য় ধাপে বাকী ইউনিয়ন পরিষদগুলোয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
২য় ধাপে তালিকায় না আসলেও ৩য় ধাপে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন ৩য় ধাপের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না করলেও, বরুড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মাঠ।
এ উপজেলার ১৩নং আদ্রা ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরী এবং বিএনপির সাবেক সাংসদ জাকারিয়া তাহের এর নিজস্ব ইউনিয়ন। তাই সবসময় বরুড়া উপজেলায় একটু ভিন্ন মাত্রার আমেজ বয়ে যায় আদ্রা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে। এই ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দখলে এসেছে চলতি বছর অনুষ্ঠেয় উপ নির্বাচনে। এর আগে কখনো সিংহাসন ছুঁতে পারেন নি আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী। গেলো বছর ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিএনপির ফজলুল হকের আকস্মিক মৃত্যুর পর এ বছর সে ইউনিয়নে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপ নির্বাচনে ১ম বারের মতো কোনো আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেন।
দলের সিনিয়র নেতা আঃ করিম আওয়ামী লীগের ১ম চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নেন। কিন্তু জয়লাভের পর দলের ভাবমূর্তিতে প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকেছেন চেয়ারম্যান আঃ করিম। সাংসদ নাছিমুল আলম অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে এই গুরু দায়িত্ব অর্পণ করলেও, দলের নেতাকর্মীদের নূন্যতম মন রাখতেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এছাড়াও একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি করে তোপের মুখে রয়েছেন তিনি।
ইউনিয়নের একবাড়িয়া – কাকৈরতলা খাল খনন করে সে খালের মাটি বিক্রি করে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে সমালোচনার জন্ম দেন এই চেয়ারম্যান। শুধু তা-ই নয়, তার পরিষদের মেম্বার, মহিলা মেম্বারদের সাথে যারপরনাই খারাপ আচরণ করার অভিযোগও রয়েছে এই বিতর্কিত চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে পরিষদের জনৈক মহিলা মেম্বারের বেতন ভাতার টাকাও আত্মসাৎ করেছেন এই চেয়ারম্যান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা করায় জনৈক কাউসার নামক ব্যক্তিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ নেতাকর্মী দিয়ে তাকে প্রকাশ্যে মারধরের হুমকির একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। যা ওই ইউনিয়নের মানুষের মনে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন আঃ করিম।
ফলে, এ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মনেও চাপা কষ্টের রেশ পাওয়া গেছে। নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন ত্যাগী নেতা জানান, নাছিমুল আলম চৌধুরীর ভ্যানগার্ড হয়ে দলের মনোনীত প্রার্থীর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান বসাতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু আঃ করিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তার ভিতরে গোঁয়ামি ভাব কাজ করা শুরু করেছে। দলের হ্যাভিওয়েট নেতাকর্মীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্যের চোখে দেখছেন তিনি। যা আমাদের জন্য খুবই দুঃখের ব্যাপার। বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কের সৃষ্টি করে আমাদের এবং আমাদের দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন। আমরা এখন রাস্তাঘাটে মাথা নীচু করে চলতে হয়। বড় গলায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে তার জন্য ভোট চেয়েছি, কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আমাদের হতাশ ই করেছেন কেবল।