নানাবিধ বিতর্কের জেরে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে শুরু হয় এ অভিযান।
শনিবার (০৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলার তদন্তভার পেয়েছে সিআইডি। ওই তদন্তের অংশ হিসেবেই ওই বাসায় গেছেন সিআইডি সদস্যরা। অভিযান শেষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে হেলেনা জাহাঙ্গীর বর্তমানে সিআইডি হেফাজতেই রয়েছেন। তাকে সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর আগে গত ৩ আগস্ট হেলেনা জাহাঙ্গীরকে পৃথক ৪ মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এদিকে গত রোববার (১ আগস্ট) গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও পল্লবী থানায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে গুলশান থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় তাকে তিন দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়।
গত ২৯ জুলাই রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম, ওয়াকিটকি ও বিদেশি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। ওইদিন রাতে মিরপুরে হেলেনার জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন এবং জয়যাত্রা আইপি টিভি ভবনেও অভিযান চলানো হয়।
আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দিয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতিবহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামে একটি সংগঠন করে আলোচনায় আসেন। আওয়ামী লীগ এ ধরনের সংগঠনকে অনুমোদনহীন ও ভুঁইফোড় বলে উল্লেখ করেছে।
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। তখন দাবি করতেন, তার কোনো রাজনৈতিক দল নেই। তিনি স্বতন্ত্র রাজনীতি করতে চান। যদিও পরে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
হেলেনা জাহাঙ্গীর গুলশান ক্লাব, গুলশান নর্থ ক্লাব, বারিধারা ক্লাব, কুমিল্লা ক্লাব, গলফ ক্লাব, গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাব, বিজিএমইএ অ্যাপারেল ক্লাব, বোট ক্লাব, গুলশান লেডিস ক্লাব, উত্তরা লেডিস ক্লাব, গুলশান ক্যাপিটাল ক্লাব, গুলশান সোসাইটি, বনানী সোসাইটি, গুলশান জগার্স সোসাইটি ও গুলশান হেলথ ক্লাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
এবিএন/মমিন/জসিম